কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
লাইফস্টাইল

কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ

বাংলাদেশের মরমী সাধক ও বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মাজার সারা দেশ থেকে ভক্ত ও পর্যটকদের জন্য অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াতে অবস্থিত এই মাজার দর্শন শুধু ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বাংলা সংস্কৃতি ও বাউল সংগীতের ঐতিহ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

যাওয়ার উপায়:

লালন শাহের মাজারে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পথে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ায় পৌঁছাতে হলে বেশ কয়েকটি বিকল্প রয়েছে। প্রধানত বাস, ট্রেন এবং ব্যক্তিগত গাড়ির মাধ্যমে সেখানে যাওয়া সম্ভব।

বাসে যাত্রা:

    • ঢাকা থেকে সরাসরি কুষ্টিয়া যাওয়ার বেশ কিছু বাস সার্ভিস রয়েছে। এনা, শ্যামলী, গ্রিনলাইন প্রভৃতি সার্ভিস দিয়ে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া পর্যন্ত বাস ভাড়া সাধারণত ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে, বাসের মান এবং সার্ভিসের উপর নির্ভর করে।
    • কুষ্টিয়া শহরে পৌঁছানোর পর, শহর থেকে অটো, রিকশা বা মোটরবাইকে করে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই ছেঁউড়িয়ায় লালন শাহের মাজারে পৌঁছানো সম্ভব। এই পথের খরচ খুব সামান্য, ৫০-১০০ টাকা হবে। 

ট্রেনে যাত্রা:

      • ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যাবার জন্য রূপসা এক্সপ্রেস ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি প্রধানত ব্যবহৃত হয়। ট্রেনের টিকিটের মূল্য শ্রেণীভেদে ৩০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে পড়ে।

ট্রেনে কুষ্টিয়া পৌঁছানোর পর একইভাবে শহরের যেকোনো স্থান থেকে রিকশা বা অটো রিজার্ভ করে মাজারে যাওয়া যায়।

Advertisements

ব্যক্তিগত গাড়িতে:

        • যারা আরামদায়ক ভ্রমণ করতে চান, তারা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যাত্রা করতে পারেন। ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে কুষ্টিয়া পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। যাত্রা পথে মাওয়া বা আরিচা ফেরিঘাট ব্যবহার করে পদ্মা পার হতে হয়। এতে সাধারণত ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগে।
        • গাড়ির ফুয়েল ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে আনুমানিক ৩,০০০-৪,০০০ টাকা খরচ হতে পারে।

থাকার ব্যবস্থা:

কুষ্টিয়া শহরে বেশ কিছু হোটেল ও গেস্টহাউস রয়েছে যেখানে সাশ্রয়ী মূল্যে থাকা যায়। সাধারণত হোটেল রুমের ভাড়া ৫০০ থেকে ২,০০০ টাকার মধ্যে পড়ে। যারা একটু আরামদায়ক পরিবেশ চান, তাদের জন্য ভালো মানের হোটেলগুলোতে ২,৫০০-৫,০০০ টাকার মধ্যে রুম পাওয়া সম্ভব।

খাবার:

কুষ্টিয়াতে প্রচলিত বাঙালি খাবার সহ বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় খাবার পাওয়া যায়। সাধারণ রেস্টুরেন্টে খাবারের জন্য প্রতিজনের খরচ ১০০-৩০০ টাকা হতে পারে। তবে চাইলে আপনি স্থানীয় বাজার থেকে কুষ্টিয়ার বিখ্যাত মিষ্টি ও মন্ড কিনে নিতে পারেন।

মাজারে বিশেষ আকর্ষণ:

প্রতিবছর লালন শাহের মাজারে বিশেষভাবে পালন করা হয় লালনের তিরোধান দিবস ও লালন মেলা। এই সময় হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থী এখানে আসেন এবং লালনের গান ও বাউল সংগীত পরিবেশন দেখেন। এসময় ভ্রমণ করলে এক অনন্য অভিজ্ঞতা হতে পারে।

সমাপ্তি:

লালন শাহের মাজার ভ্রমণ একটি আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক যাত্রা। সেখানে গিয়ে লালনের ভাবধারা ও জীবনদর্শন উপলব্ধি করতে পারবেন। যেভাবেই যান না কেন, এই ভ্রমণ আপনার মানসিক প্রশান্তি ও নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button